আসন্ন স্থানীয় স’রকার নির্বাচনে যোগ্য ও ত্যাগীদের মূ’ল্যায়ন করবে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী এবং দুঃসময়ে দলের জন্য যারা হাল ধরেছেন, এবার মনোনয়নে তারাই প্রাধান্য পাবেন। দলের ভিতর উড়ে এসে জুড়ে বসা,
হাইব্রিড ও দলের নাম ভাঙিয়ে যারা গত সাড়ে ১১ বছরে টাকার মালিক হয়েছেন তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি গাইডলাইন দিয়েছেন দায়িত্বপ্রা’প্ত নেতাদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে আগামী অক্টোবরে পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে ২৩৪ পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আগামী অক্টোবরে আবার পৌর ভোট নিয়ে ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগও ভিতরে ভিতরে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে। পৌরসভাসহ অন্য স্থানীয় স’রকার নির্বাচনে ক্ষ’মতাসীন দলের মনোনয়নের জন্য এখনই শুরু হয়েছে লবিং-তদবির।
হাইব্রিডদের দাপটে যেসব ত্যাগী ও নিবেদিত নেতা-কর্মী নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন তাদেরই খুঁজে মূ’ল্যায়ন শুরু করেছেন তিনি। চলতি বছরে কয়েকটি উপনির্বাচন এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগে এমন নজির স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনেও এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তিনি।
সূত্র আরও জানান, স্থানীয় স’রকারের যে কোনো নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্তকরণে তৃণমূ’লকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা ভোট কিংবা সমঝোতার মাধ্যমে তিনজনের নাম কেন্দ্রে পাঠান। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
কিন্তু বিগত সময়ে প্রার্থী চূড়ান্তকরণে তৃণমূ’লে বিশেষ করে জে’লা-উপজে’লা নেতাদের পক্ষপাতিত্ব, এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব বিস্তারের অ’ভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার দলের ভিতরে গণতান্ত্রিক চর্চার নামে ভোট ‘কেনাবেচা’ও অ’ভিযোগও আছে। ফলে ভোট কেনাবেচায় ত্যাগী পরীক্ষিত নেতারা হাইব্রিড ও টাকার মালিকদের কাছে হেরে যান।
এবার এখানে ব্যতিক্রমী সি’দ্ধান্ত আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলীয় প্রধান। দলের পুরনো, ত্যাগী ও পরীক্ষিত প্রায় সব নেতাকেই ব্যক্তিগতভাবে চেনেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এবার স্থানীয় স’রকার নির্বাচনে তাদের কপাল খুলতে পারে বলে জানা গেছে। এ প্রস’ঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত,
ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাদেরই আগামী স্থানীয় স’রকার নির্বাচনে মূ’ল্যায়ন করা হবে। যারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির স’ঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিছুই পাননি কিন্তু জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন নেতাকেই বেছে নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কয়েকটি উপনির্বাচনেও ত্যাগীদের মূ’ল্যায়ন করা হয়েছে। দলীয় সভানেত্রী এখন ত্যাগীদের খুঁজে খুঁজে বের করছেন।’ আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,
‘দলীয় সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের একটি গাইডলাইন দিয়েছেন। আমরা সে অনুযায়ী কাজ শুরু করেছি। যোগ্য ও পরীক্ষিতদেরই মূ’ল্যায়ন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগাররাই আওয়ামী লীগ করবে। দুর্দিনের সাহসী সৎ নেতা-কর্মীরাই সবখানে কাজ করবে।
এখানে ভাই লীগ-আত্মীয় লীগের কোনো সুযোগ নেই।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা দলের নিবেদিত, সর্বমহলের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, দুঃসময়ে দলের হাল ধরেছিলেন তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।