তুরষ্কে বাংলাদেশ দূ’তাবাস ভবন উদ্বোধ’ন করা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী করো’নাকালে তুরষ্ক সফর করবেন কিনা এই নিয়ে দ্বি’ধান্বিত ছিলেন। বি’ষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তাকে বললেন যে, তুরষ্কে যেতে হবে আর তিনি বাংলাদেশ থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উদ্বোধ’নী অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুঝতে পারলেন না যে কেন প্রধানমন্ত্রী তাকে এই সময়ে তুরষ্কে যেতে বলছেন এবং এই করো’না স’ঙ্কটের সময়ে দূ’তাবাস ভবন উদ্বোধ’নের গুরুত্ব এবং রাজনৈতিক তাৎপর্য কি।
তারপরেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তাকে মানতেই হবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গেলেন তুরষ্কে। উল্লেখ্য, তুরষ্ক বিশ্বে অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ এবং রপ্তানিকারকও বটে।
আর এজন্যেই ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে কিনা তা নিয়ে এক ধরণের দ্বিধাদ্ব’ন্দ্ব ছিল।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, পূজো’র সময়ে ভারতে ইলিশের চা’হিদা থাকে, কাজেই ইলিশ রপ্তানি করা হবে। গতকালই প্রথম ইলিশের চালান বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে চলে গেছে।
ঘ’টনা ৩: সন্ধ্যায় ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হলো যে তারা বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি নি’ষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং এখন থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করা হবে না।
ভারতের এই আকস্মিক সি’দ্ধান্তে সবাই অবাক হয়ে গেল এবং নূন্যতম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্প’র্কের শিষ্টাচারটুকু ভু’লে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধরণের সি’দ্ধান্ত ঘোষণা করলো।
এই ঘ’টনা তিনটি ঘ’টনাকে একত্রে মেলানো গেলে দেখা যাবে যে, শেখ হাসিনার কূটনীতিক দূরদর্শিতার কাছে কিভাবে ভারত পরাজিত হল। এর আগেও কিছু ঘ’টনা রয়েছে যা এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীকে ডেকে বললেন যে, পেঁয়াজের সামনে স’ঙ্কট হতে পারে। কাজেই এখন থেকেই পেঁয়াজ আম’দানি করার উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রনালয় বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজের জন্য এলসি আম’দানির সি’দ্ধান্ত নিল।
বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আম’দানির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ। তিনি জানতেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরের মতো এই বছরের সেপ্টেম্বরেও ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ আম’দানি নি’ষিদ্ধ করতে পারে।
আর এই কারণেই তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীকে আগে থেকেই পেঁয়াজ আম’দানির প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তুরস্কে পাঠিয়েছিলেন, যেন তুরস্কের স’ঙ্গে সম্প’র্কটা আরও প্রগাঢ় হয়। এই সম্প’র্কের সূত্র ধরে তুরস্ক থেকে দ্রু’ত গতিতে পেঁয়াজ আনা যায়।
আবার তিনি প্রতিহিংসার কূটনীতি না করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি নি’ষিদ্ধ করার পরও ভারতে ইলিশের চালান পাঠান। অর্থাৎ সংকীর্ণ কূটনীতি, সংকীর্ণ প্রতিবেশী সুলভ রাষ্ট্রের আচরণের প্র’তিবাদ তিনি করলেন উদারতা দিয়ে। এটাই হল কূটনীতির এক নতুন ব্যাকরণ। এই ব্যাকরণ রচনা করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি কূটনীতিক শিষ্টাচার ও উদার কূটনীতির এক নতুন নজির স্থাপন করে ভারতকে কূটনীতিকভাবে পরাজিত করলেন।
বাংলাদেশে গতকাল ভারতের পেঁয়াজ নি’ষিদ্ধ হওয়ার পর আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। কিন্তু বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বেশিক্ষণ থাকবে না। পেঁয়াজের ঘাটতি থাকবে না। আগামী দুই চারদিনের মধ্যেই চীন, তুরস্কসহ বেশ কিছু দেশ থেকে পেঁয়াজ আসবে। সেই পেঁয়াজ আসার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশেও পেঁয়াজ আছে।
কৃত্রিমভাবে যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে তারা অচিরেই স্তিমিত হয়ে যাবে, বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হবে। এখানে শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক দুরদৃষ্টিতার দুটি দিক পাওয়া যায়- একটি হলো তিনি আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন যে আরেকটি পেঁয়াজ কূটনীতি হতে যাচ্ছে।
এজন্য তিনি সম্ভব্য যে সমস্ত দেশগুলো পেঁয়াজ রপ্তানি করে তাদের স’ঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছিলেন। তুরস্কতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়ে তিনি সম্প’র্কের একটা নতুন মেলবন্ধ’নও তৈরী করে রেখেছিলেন। দ্বিতীয়ত, তিনি ভারতের সংকীর্ণ পেঁয়াজনীতির জবাব দিলেন ইলিশ উদারতা দিয়ে।
এরফলে ভারত আরেকবার শেখ হাসিনার কাছে কূটনীতিকভাবে পরাজিত হলো। যেমন অতীতে বহুবার এভাবেই কূটনীতিক উদারতা দিয়ে শেখ হাসিনা বিজয়ী হয়েছিলেন এবং বিশ্বরাজনীতিতে নিজের জায়গা দ’খল করেছিলেন। এবার পেঁয়াজ কূটনীতিতেও তিনি দেখালেন, সংকীর্নতা করে জয়ী হওয়া যায় না, জয়ী হতে হয় উদারতা দিয়ে। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার।