জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ঋ’ণ পাবেন অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এই ঋ’ণ পাওয়া যাবে। যাদের দৈনিক আয় ৩ থেকে ৫শ’ টাকা দেশের এমন অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাই এ ঋ’ণ পাবেন।
ক’রোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা উদ্যোগ টিকিয়ে রাখতে স্বল্পসুদে ঋ’ণ দেওয়ার এমন সি’দ্ধান্ত নিয়েছে বেস’রকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংক। ঋ’ণের বিপরীতে সুদ দিতে হবে মাত্র ৪ শতাংশ হারে।
ঋ’ণ নেওয়া যাবে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। স’রকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ব্যবসায়ীদের ঋ’ণ সুবিধা দেবে স’রকারি-বেস’রকারি অংশীদারিত্বের এই ব্যাংক। সম্প্রতি এ বি’ষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির স’ঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করেছে ব্যাংকটি।
এ বি’ষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, যারা ডাব বিক্রি করেন, ফল বিক্রি করেন তারাও আছেন। আবার যারা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অন্যান্য সবজি বিক্রি করেন তারাও আছেন।
আইএফআইসি ব্যাংকের স’ঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সদস্যদের ঋ’ণ পেতে ১০০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। হিসাব খোলা হয়ে গেলে ব্যবসায়ীদের চেক বই সরবরাহ করা হবে পরবর্তীতে চেক বইয়ের পাতায় জমা রেখে ঋ’ণ দেওয়া হবে।
এ বি’ষয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল হাসান বলেন, বড় বড় ঋ’ণগুলো আমরা যেভাবে দিয়ে থাকি এই ঋ’ণগুলো তাদের মতো বিবেচিত হবে না।
তাদের জন্য খুব সহজ পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে সদস্য হয়ে এই ঋ’ণ নিতে পারবেন। প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা।
তাই আমরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বিনা জামানতে ঋ’ণ দেওয়ার এই কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে জামালপুর ও শেরপুরের জে’লার অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋ’ণ দেওয়া হবে। এরপর দোকান মালিক সমিতির তালিকা অনুসারে পর্যায়ক্রমে সারাদেশের অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এ ঋ’ণ পাবেন।
কোটিপতি ব্যবসায়ী; শুরুতে পুজি ছিল মাত্র ১৫০ টাকা!
রাজবাড়ী পৌরসভা’র নিয়ামুল হক স্বপন। বাবাকে হা’রান ২০০১ সালে। পকে’টে তখন মাত্র দেড়শ টাকা। ওই স্বল্প পুঁজি নিয়েই শুরু করেন মাছ চাষ। ১৯ বছর আগের সেই দেড়শ টাকা স্বপনকে এনে দিয়েছে কোটি টাকা। তিনি এখন মাছের ঘের, ফল-সবজি বাগানের মালিক।
অহনা-অন্তর বহু’মুখী কৃষি খামা’রের মালিক নিয়ামুল হক স্বপনের প্রতি মাসে আয় প্রায় দুই লাখ টাকা। খামা’রের পুকুর পাড়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল চাষ করেন। খামা’র পরিচর্যাকারীদের জন্য রয়েছে থাকার ব্যবস্থা, মাছ চাষিদের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষণের স্থান।
জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই মাছ চাষে বেশ আ’গ্রহ ছিল স্বপনের। বাবা কোম’র উদ্দিনের মৃ’ত্যুর পর দেড়শ টাকা দিয়ে ৩০ শতাংশ জমিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ আ’ট’কে রাখেন ও চাষের উদ্দেশ্যে কিছু কার্প জাতীয় মাছ ছাড়েন। কয়েক বছর মাছ চাষ করে বেশ সফলতা পান।
পরবর্তীতে ওই জমিতে পুকুর কে’টে আরো বড় পরিসরে মাছ চাষ করেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। এখন খামা’র থেকে বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। সফল খামা’রি নিয়ামুল হক স্বপন জানান, বিলে চাষ করা মাছ বিক্রি করে ১২ বিঘা কৃষি জমি কিনেছেন তিনি।
সেখানে শুকনো মৌসুমে ধান ও বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করেন। এছাড়া পুকুর পাড়ে নানা ধরনের বি’ষমুক্ত সবজি চাষ করেন। এখন চারটি পুকুরের আলাদা রেণু-পোনা রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্প জাতীয় মাছ চাষ ও পুকুরের এক পাশে দুটি শেডে প্রায় চার হাজার মুরগি পালন করছেন তিনি।
স্বপন বলেন, পরিবারের বড় স’ন্তান হওয়ায় বাবার মৃ’ত্যুর পর সব চা’প এসে পড়ে আমা’র ও’পর। কী’ করে সংসার চালাবো বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু পকে’টে ছিল মাত্র দেড়শ টাকা আর বিলে ৩০ শতক জমি। নানা চিন্তা-ভাবনার পর শুরু করে দিলাম মাছ চাষ।
আমা’র ভাই ও ছে’লে আমাকে অনেক সাহায্য করছে। এখন আমা’র মাছের ঘের, সবজির বাগান, মুরগির খামা’র রয়েছে। ক’ষ্টে গড়া খামা’র থেকে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টাকা আয় করি। তিনি আরো বলেন, আমাকে দেখে প্রতিবেশী অনেক বেকার যুবক এখন মাছের ঘের কিংবা খামা’রের মালিক।
অনেকেই আমা’র কাছে এসে বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরাম’র্শ নেয়। প্রাকৃতিক দু’র্যোগ না হলে এসব ব্যবসায় লোকসান নেই। যারা বেকার কিংবা গরিব, তারা ছোট পরিসরে এসব খামা’র করলে সফলতা পাবে। স’রকারও মৎস্য চাষি ও খামা’রিদের অনেক সহযোগিতা করছে।
রাজবাড়ী জে’লা মৎস্য কর্মক’র্তা জয়দেব পাল বলেন, নিয়ামুল হক স্বপন একজন সফল মৎস্য চাষি হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। করোনা মহামা’রির মধ্যেও প্রান্তিক পর্যায়ে তিনি মাছের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছেন। মৎস্য অধিদফতর থেকে বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দক্ষ’তার কারণে তিনি এখন অনেক তরুণ খামা’রির আদর্শ।