দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে করেছেন তিনি। যেকোনো চরিত্রেই যেনো মানানসই। তার অভিনীত ‘মনপুরা’ ও ‘আয়নাবাজি’
চলচ্চিত্র দুটি গেল এক যুগের সেরা ব্যবসা সফল ছবি হিসেবে সমাদৃত।এই অভিনেতার অভিনয় ক্যারিয়ারের ২৪ বছর চলছে। আগামী বছরে তিনি পা রাখবেন রজতী জয়ন্তীতে।
আজ শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) তিনি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন তার ভাবনায় টেলিভিশনের নানা সংকট ও একাল সেকালের নানা বিশ্লেষণ।
আর ১টা বছর পার হলে,টেলিভিশনে আমার মুখ দেখানো ২৫ বছর পূর্ণ হবে। এই লাইনটি পড়ার সাথে সাথে অনেকেই আমার বয়স বা শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু কথা বলতে পারেন।
অনেক অভিনেতাদের সাথেও তুলনা করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। তাঁরা যদি দীর্ঘ বয়স পর্যন্ত নিজেদেরকে সুন্দর ও সুঠাম দেহী রাখতে পারেন,
আমি বা আমরা কেন পারছিনা?? এই দীর্ঘ লেখাটি পুরোটা পড়লে,অনেক প্রশ্নেরই জবাব মিলতে পারে। বোঝা যাবে আমরা কোথায়, কিভাবে কাজ করছি।
তবে এই লেখাটি আমার টেলিভিশন/সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে উদ্দেশ্যে করে লেখা। এর বাইরে যারা পড়বেন, টেলিভিশন সম্পর্কে তাঁদের কিছু
নতুন ধারনা হতে পারে। কারন এটা দর্শকের প্রতিদিনের প্রশ্ন…….‘আগের মত সুস্থ, সুন্দর, রুচিশীল, জনপ্রিয় নাটক এখন কেন নির্মিত হচ্ছে না?”
আমাদের সিনেমার এক সময় সোনালী অতীত ছিল। কিছু অযোগ্য এবং স্বার্থপর লোকের আধিপত্যে আমরা সে অতীত হারিয়েছি। পরবর্তীতে টেলিভিশন নাটক দেশের
ধিকাংশ মানুষের সুস্থ বিনোদনের মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এবং আস্থা অর্জন করে।বিভিন্ন সময়ে নানান সংকট পার করে টেলিভিশন শিল্প একটা শক্ত অবস্হান তৈরী করতে
পারলেও পূর্ণাঙ্গ পেশাদ্বারিত্ব কখনই এই মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে টেলিভিশন নাটকও এক সময় বাংলা সিনেমার মতই, কিছু সুবিধাভোগী অযোগ্য
মানুষের দখলে চলে যায়। সুস্থ সুন্দর পরিশীলিত টেলিভিশন নাটকের ধারাটি নানান চক্রে পড়ে, নিজস্ব শিল্প ও সৌন্দর্য হারাতে থাকে।
সেগুলো আমাদের চোখের সামনেই। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে, শিল্পের খোলস থেকে টেনে বের করে নাটককে শুধুই ব্যবসার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা
শুরু হয়। অধিকাংশ চ্যানেল, এজেন্সী, প্রডিউসার, ডিরেক্টর, কলাকুশলী, শুধু নিজেদের স্বার্থ আর ব্যাবসা দেখতে গিয়ে, প্রকৃত ভালো আর মন্দের পার্থক্য গুলিয়ে,
টেলিভিশন নাটককে অখাদ্যে পরিণত করেছে।আস্তে আস্তে টেলিভিশন নাটককে, শিল্পের মাপ কাঠি থেকে বের করে এনে, ভিউ এর মাপ কাঠিতে মাপা শুরু হয়েছে।
ভিউ আর টি আর পির দোহাই দিয়ে, এর চক্করে পড়ে আমরা আমাদের নাটকের মান কোথায় নামিয়ে ফেলেছি, সেটাও মনে রাখা দরকার।
ইদানিং ভালো টেলিভিশন নাটকের সংখ্যা এতটাই কমে গেছে যে,তা দিয়ে এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারে না। এক্ষেত্রে সকলেরই সমান দায় রয়েছে।
শুধু ভিউ না দেখে, সংশ্লিষ্ট সকলেরই নাটকের মান টা দেখা অনেক বেশী জরুরী বলে আমি মনে করি।প্রত্যেকটি টেলিভিশন চ্যানেল বা নাটক