একজন গর্বিত পু’লিশ অফিসার হওয়ার ব্রত নিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন শফিকুল ইস’লাম সাজু। অন্যায় আর অবিচারের বি’রুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ঠিক পথেই এগিয়ে ছিলেন।
কিন্তু কপালে সুখের দেখা মেলেনি। দেশ মাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করে যে মানুষটি প্রথম জ’ঙ্গি অ’ভিযানে অংশ নিয়ে ৩৩ জন জ’ঙ্গিকে গ্রে’ফতার করেন আজ তার ভাগ্যে কেবলই লাঞ্ছনা।
ফলে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে শতবর্ষী মা, স্ত্রী’ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এক সময়ের সাহসী পু’লিশ অফিসার শফিকুল ইস’লাম সাজু।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজে’লার ই’মাদপুর ইউনিয়নের ই’মাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শফিকুল। ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে অষ্টম সন্তান শফিকুল
শীর্ষ জ’ঙ্গি নেতা আতাউর রহমান সানি, ময়মনসিংহের ত্রিশালে পু’লিশের ভ্যান থেকে পালিয়ে যাওয়া আ’সামি সালাউদ্দিন সালেহীন ও বাংলাভাইয়ের দেহরক্ষী মামুনুর রশীদসহ ৩৩ জনকে গ্রে’ফতার করেন।
গ্রে’ফতার অ’ভিযানই যেন কাল হয়ে ওঠে জীবনে। রোষানলে পড়েন তৎকালীন মন্ত্রী, এমপিসহ পু’লিশের ঊর্ধ্বতন কর্মক’র্তাদের।
অ’ভিযান শেষে ক্ষেতলাল থা’নায় ফিরে এসআই শফিকুল ইস’লাম সাজু বাদী হয়ে মা’মলা করেন।যদিও গ্রে’ফতারদের অনেকে ছাড়া পান এবং পরে আবারও গ্রে’ফতার হন।
ঘটনাটি ওই সময় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করলেও কয়েক দিনের প্রেক্ষাপট বদলে যায়।প্রথমে অ’স্ত্র হা’রানোর অ’প’রাধে দুজন কনস্টেবলকে চাকরিচ্যুত করা হয়,
কিন্তু তারা বিশেষ জে’লার লোক হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যেই চাকরি ফিরে পান।অন্যদিকে ওসি ইকবাল শফির ওয়াকিট’কি হা’রানোর অ’প’রাধে
তার বি’রুদ্ধে বিভাগীয় মা’মলা হলেও তা থেকে তিনিও খালাস পান। অথচ সব কৃতিত্বের দাবিদার এসআই সাজুকে কয়েক দিনের মধ্যেই বদলি করা হয়।
ওই ঘটনায় বিভাগীয় মা’মলার দ’ণ্ড হিসেবে ব্ল্যাকমা’র্ক দিয়ে তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটনে বদলি করা হয়। ফলে ডিএমপিতে ঊর্ধ্বতন পু’লিশের কাছে অ’প’রাধী থেকে যান এসআই সাজু।
মিরপুর থা’নায় কর্ম’রত থাকা অবস্থায় ওসি ই’ন্তেজার রহমান (যিনি ঢাকাস্থ বগুড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন) নানাভাবে তাকে হয়’রানির চেষ্টা করেন।
অবশেষে জমি নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধের ঘটনায় সাজুর নাম যু’ক্ত করে দেয়া হয়। ওই ঘটনায় তার বি’রুদ্ধে বিভাগীয় মা’মলা হয়।
তৎকালীন (ডিসি) কোহিনূর মিয়া শফিকুল ইস’লাম সাজুর বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেন এবং ২০০৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাকে চূড়ান্তভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এরপর থেকেই শুরু হয় মানবেতর জীবন।শফিকুল ইস’লাম সাজু জানান, তিনি ডিএমপি পু’লিশ কমিশনার বরাবর আপিল করেন। যার মাধ্যমে আপিল করতে হয় তিনি ছিলেন ই’ন্তেজারের পরম বন্ধু ইউনুস আলী (ওসি)।
ফলে আপিলের সাজা মওকুফ না করে বরং তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।বড় ছে’লে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। অর্থাভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেনি।