প্রশান্ত মহাসাগরের একদম পূর্ব কোণে ৬৮০০ টি দ্বীপ নিয়ে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটি দেশ জাপান। জাপান যে শুধু প্রযুক্তিতে এগিয়েছে তা নয়,
শিল্প সাহিত্যে চিত্রকলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে তাদের অবাদ বিচরণ। খুবই শান্ত স্বভাবের জাপানিরা।
একটু লাজুক প্রকৃতিরও বটে! সহজেই অন্যদের স’ঙ্গে খাতির জমিয়ে ফেলতে পারে জাপানিরা। সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের কিছু বিচিত্র ত’থ্য।
বিশেষ করে এদের গোসল সংস্কৃতি। জাপানিদের সবচেয়ে অদ্ভুত এক ব্যাপার হচ্ছে এদের পাবলিক বাথ। ঐহিত্যবাহী পাবলিক গোসলখানা জাপানে
সেন্টুর এর ভে’তরে সবাই ন’গ্ন থাকতে। বাইরে লাজুক প্রকৃতির হলেও বাথের ভে’তর তাদের সেই লজ্জার কোনো প্রকাশি পাবেন না।
এটাই এর রীতি। এই কাণ্ড দেখে যদি ভু’লেও হেসে ফে’লেন, তাহলে আপনাকে অভদ্র ভাববে তারা।
গোসলের জন্য ন’গ্ন হওয়া স্বাভাবিক এখানে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
সেই স’ঙ্গে কিছু নিয়মও মানতে হবে আপনাকে। যেমন জলটঙ্গিতে কাপড় পরে ঢোকা নি’ষেধ, জাম্প দেয়া যাবে না, গা ধোওয়ার সময় অন্যের গায়ে পানি যেন না যায়, ব্যবহার শেষে পানির কল বন্ধ করে দিতে হবে।
তোয়ালে ব্যবহার করা যাবে তবে পানিকে অপরিষ্কার করা যাবে না। তোয়ালে রাখতে ঝামেলা হলে, মাথার উপর রাখতে পারেন। এতে অবশ্য খানিকটা বিপত্তিও আছে, মাথাও গরম হবে, মস্তিষ্কে র’ক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
আপনার কাপড় রাখতে পারবেন ছোট্ট বাক্সে। এরপর তালা লাগিয়ে চাবি হাতের স’ঙ্গে ঝু’লিয়ে রাখতে হবে পুরো সময়টা। সেন্টুতে একস’ঙ্গে পনের-বিশজনের মত গোসল করতে পারে।
সবাই এখানে উ’লঙ্গ! এবং গভীর মনোযোগে গোসল করছে তারা। কেউ কারো বিশেষ অ’ঙ্গের দিকে তাকাচ্ছেন।
লজ্জা পেলে কেউ তোয়ালে পরতে পারেন। তবে কাউকে বুঝতে দেয়া যাবে না, আপনি লজ্জা পাচ্ছেন। জানলে বাকিরাও লজ্জা পাবে।
তবে গরমের দেশের মানুষদের এখানে গোসল করা একটু ক’ষ্টই। কেননা জাপান শীতের দেশ হওয়ায় বাথের পানি থাকে অনেক গরম। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস!
প্রথমে সহ্য করা ক’ষ্ট। তবে কিছুক্ষণ বসার পর গা সয়ে যাবে। তবে পাশের আরও দুটি ছোট জলটঙ্গি আছে। একটির পানি ঠাণ্ডা, একেবারেই জিরো ডিগ্রি।
খুব গরম লাগলে ওখানে গিয়ে ঠাণ্ডা হয়ে নেয়া যায়। এখানেই শেষ নয়। খাঁটি ‘রেড ওয়াইন’ এও শ’রীর ভিজিয়ে নিতে পারবেন। কেননা একটি বাথে থাকে ‘রেড ওয়াইন’।
বাথে আপনাকে সাবান শ্যাম্পু ওরাই দিবে। যতোক্ষণ খুশি গোসল করতে পারবেন, কেউ কিছু বলবে না। বিল একই, ৫৫০ ইয়েন।
অনেকক্ষণ ধরে গোসল করে শ’রীর ক্লান্ত লাগলে ঢুকে পরতে পাবেন হিটিং রুমে। সারি সারি বেডের পাশে কয়লার চুল্লি জ্ব’লছে।
এর তাপে সবার ঘাম ঝরছে। চাইলে টিভিতে পছন্দের শো দেখে নিতে পারবেন। হিটিংরুম থেকে বের হতেই মনে হবে, আপনার ওজন
হয়তো অনেক কমে গেছে। শান্তিতে মন-প্রা’ণ উড়ছে। কোনো দুঃচিন্তা নেই, অভাব নেই, অভিযোগ নেই। শ’রীরের সব ক্লান্তি যেন এক ঝটকায় দূর হয়ে গেছে।